স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে এয়ার কোয়ালিটি মনিটরিং কর্মশালা

সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণ বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানের পাশাপাশি বিষয়টি থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজতে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে এয়ার কোয়ালিটি মনিটরিং শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসের অডিটোরিয়ামে দুই দিনব্যাপী ওই কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ইউএস ফরেস্ট সার্ভিসের প্রজেক্ট লিডার ড. আবু মোস্তফা কামাল উদ্দিন।

এয়ার কোয়ালিটি মনিটরিং ও হেলথ ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট বিষয়ে চলমান এই প্রশিক্ষণের সহযোগী হিসেবে রয়েছে স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সেন্টার ফর অ্যাটমোস্ফেরিক পলিউশন স্টাডিজ (সিএপিএস)।

প্রতিটি রিসার্চের একটা লক্ষ্য থাকে। সে লক্ষ্য হলো প্রাপ্ত ফলাফল কাজে লাগানো। রিসার্চ করা হলো কিন্তু তার প্রভাব নেই, তা ফলপ্রসূ হবে না।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএস ফরেস্ট সার্ভিসের প্রজেক্ট লিডার ড. আবু মোস্তফা কামাল উদ্দিন
মোস্তফা কামাল উদ্দিন বলেন, প্রাপ্ত ফলাফল যখন প্রয়োগ হবে, তখনি পরিবর্তন আসবে। পরিবর্তন আসবে সর্বসাধারণের মাঝে। আমরা যারা গবেষণা করি, আমরা নিজেরা নিজেদের একটা হরিণের সঙ্গে তুলনা করলে সরকার হাতির ভূমিকা রাখতে পারে। প্রচার ও পরিবর্তন আনতে মূল ভূমিকা রাখবে সরকার।

কর্মশালায় স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. গুলশান আরা লতিফা বলেন, পরিবেশ দূষণ আমাদের জন্য মারাত্মক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কল-কারখানাগুলো থেকে এটা হচ্ছে। যা আমাদের শরীরের নানাভাবে ক্ষতি করছে। কমছে মানুষের গড় আয়ু। এর জন্য কাজ করে যেতে হবে। সেই সঙ্গে মানুষকে সচেতন করা জরুরি। এমন আয়োজনের লক্ষ্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সচেতনতাসহ সঠিক তথ্য উপস্থাপন।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বায়ুদূষণ রোধে এখনই কার্যকর ভূমিকা নেওয়া না গেলে ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তন আরও বেড়ে যাবে। বাংলাদেশের মতো নিম্নভূমির অঞ্চলগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে অচিরে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

প্রফেসর আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, আমরা প্রত্যেকেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বায়ুদূষণ রোধ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারি। যে শিক্ষার্থী শিক্ষক হতে চায়, সে যেন পরিবেশ রক্ষায় সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধ তৈরি করার জন্য সচেষ্ট হয়। যে শিক্ষার্থী প্রকৌশলী হতে চায়, সে যেন তার উদ্ভাবনী জ্ঞানের মাধ্যমে এমন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে, যা পরিবেশ দূষণ রোধ করবে।
পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের এই অধ্যাপক আরও বলেন, বায়ুদূষণ জলবায়ু পরিবর্তন ও স্বাস্থ্য সমস্যার সঙ্গে স্থানীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যুও বটে। কারণ, প্রকৃতি গোটা পৃথিবীর সঙ্গে সম্পৃক্ত। সুতরাং টেকসই উন্নয়ন করতে গেলে আমরা যে যেখানেই থাকি, যেভাবেই থাকি, যে অবস্থানেই থাকি না কেন, ছোট–বড় সবাইকে আমাদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে।

কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে অ্যাকাডেমিক অ্যান্ড রিসার্স জে অর্ডিনেশন স্পেশালিস্ট মো. সামস উদ্দিন বলেন, পরিবেশ নিয়ে চিন্তা করা, গবেষণা করাসহ তা বাস্তবায়ন করা এখন সময়ের দাবি।

স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অন্য শিক্ষকরা ছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাসহ প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী এ দিন কর্মশালায় অংশ নেয়।
 

Source: Dhaka Mail