শাবিপ্রবিতে বিশ্ব বন দিবস উদযাপন
বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের উদ্যাগে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) বিশ্ব বন দিবস উদযাপিত হয়েছে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘বন সংরক্ষণের অঙ্গীকার, টেকসই উৎপাদন ও ব্যবহার’ সামনে রেখে দিবসটি উদযাপিত হয়।
সোমবার (২১ মার্চ) সকাল থেকে দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচির আয়োজন করে বিভাগটি।
শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবন 'ই' তে স্কুল শিক্ষার্থীদের নিয়ে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এতে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণের পর বিভাগের নার্সারির পার্শবর্তী টিলায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
পরবর্তীতে অ্যাকাডেমিক ভবন 'ই' থেকে এক আনন্দর্যালি বের করে বিভাগটি। র্যালিটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক পদক্ষিণ করে গোলচত্বর হয়ে অ্যাকাডেমিক ভবন 'এ' তে এসে শেষ হয়।
কর্মসূচির অংশ হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. রোমেল আহমেদের সভাপতিত্বে এবং অধ্যাপক ড. ফারজানা রায়হানের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন এগ্রিকালচার অ্যান্ড মিনারেল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ রেদওয়ান। বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকার অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক একে এনামুল হক; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. মো. সাইফুর রহমান; ইউএস ফরেস্ট সার্ভিসের ফরেস্ট্রি ইনস্টিটিউশনাল পার্টনারশিপ ডেভেলপমেন্ট স্পেশালিষ্ট শাহজিয়া মহসীন খান প্রমুখ।
এছাড়াও অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. নারায়ণ সাহা।
এ সময় বক্তারা বলেন পৃথিবীর মোট ভূমির প্রায় ২৩ শতাংশ রয়েছে বনভূমি। প্রায় ১৬০ কোটি মানুষ তাদের জীবন ও জীবিকা তথা খাদ্য, বাসস্হান, জ্বালানী, পানি, কাঠ, ওষুধ ও কর্মসংস্হানের জন্য এই বনভূমির উপর সরাসরি নির্ভরশীল।
বন ইকোসিস্টেম বা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে পৃথিবীকে মানুষের বাসযোগ্য করে রেখেছে। পৃথিবীর ৮০ শতাংশ টেরিসটেরিয়াল বায়োডাইভারসিটি বা জীববৈচিত্র্যের আবাসস্থল, বন যারমধ্যে ৬০ হাজারেরও বেশী উদ্ভিদ প্রজাতি রয়েছে।
অপরিকল্পিত বন ব্যবস্থাপনার কারণে বিশ্বব্যাপী নির্বিচারে বন উজাড় হচ্ছে। ফলে প্রতি বছর প্রায় ১৩ মিলিয়ন হেক্টর বনভূমির অধিক বা ইংল্যান্ডের সমপরিমান বনভূমি পৃথিবী থেকে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য। সৃষ্টি হচ্ছে প্রাকৃতিক দূর্যোগ, রোগ বালাই সহ নানাবিধ সমস্যার। তাই মানুষের জীবন ও জীবিকা আজ হুমকির সম্মুখীন।
মানুষের জীবন ও জীবিকার তাগিদেই বন সংরক্ষণ প্রয়োজন। বিষয়টির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেই এবং বনভূমির প্রযোজনায়তা সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ২০১২ সালে ২১ মার্চকে আন্তর্জাতিক বন দিবস ঘোষণা করে।
টেকসই বন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে টেকসই উৎপাদন ও ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব। যা মানুষের জীবন ও জীবকায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
উল্লেখ্য, দিবসটি উদযাপনে সার্বিক সহযোগিতায় ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাতা সংস্থা ইউ এস এইডের অর্থায়ন এবং ইউএস ফরেস্ট সার্ভিসের কমিউনিটি পার্টনারশিপ টু স্ট্রেংদেন সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট (কম্পাস) প্রোগ্রাম।
Source: Odhikar