খুবিতে নানা আয়োজনে আন্তর্জাতিক বন দিবস উদযাপন
বন সংরক্ষণের অঙ্গীকার, টেকসই উৎপাদন ও ব্যবহার’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি (ফউটে) ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে নানা আয়োজনে আন্তর্জাতিক বন দিবস উদযাপিত হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী বনের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে ২০১২ সাল থেকে দিবসটি পালিত হচ্ছে। সোমবার (২১ মার্চ) বেলা ১১টায় বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। পরে উপাচার্যের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য এক শোভাযাত্রা বের করা হয়।
শোভাযাত্রাটি হাদী চত্বর থেকে শুরু হয়ে শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ ভবন ঘুরে অদম্য বাংলা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, ফউটে ডিসিপ্লিনের শিক্ষক প্রফেসর এ কে ফজলুল। পরে বেলা সাড়ে ১১টায় আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে থ্রি মিনিটস টক কম্পিটিশনের গ্র্যান্ড ফিনালে ও সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা।
তিনি বলেন, গাছ যেমন করে একসঙ্গে আমাদেরকে তাদের অক্সিজেন দিয়ে, তাদের কাঠ দিয়ে, তাদের পাতা দিয়ে আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। তেমনি ভাবে আমাদের একতাবদ্ধভাবে গাছকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
তিনি আরো বলেন, গাছ আমাদের বেঁচে থাকার জন্য হার্ট স্বরূপ। গাছকে ভালোবাসা প্রকৃতিকে ভালোবাসা এবং প্রকৃতিকে উপলব্ধি করা মানব জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। গাছ আমাদের প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করছে। আজকের এই ইন্টারন্যাশনাল ডে অফ ফরেস্টে যেন আমাদের এই অঙ্গীকার হয় আমরা সবাই মিলে গাছকে রক্ষা করবো, গাছ রোপণ করবো এবং তার পরিচর্যা করবো।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস, খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফরেস্ট্র সার্ভিসের মানবসম্পদ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থাপক (কমপাস প্রোগ্রাম) মোসা. শারমিন খানম। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. মো. ইফতেখার শামস। কি-নোট স্পিকার হিসেবে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন ও আলোচনা করেন প্রফেসর ড. মো. গোলাম রাক্কিবু।
সেখানে বক্তারা বন ও বন সংরক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরেন। বক্তারা বলেন, সুন্দরবন আমাদের ন্যাচারাল প্রটেক্টর হিসেবে কাজ করে। ঝড় ঝঞ্ঝা থেকে আমাদের আগলিয়ে রাখে।
পৃথিবীর ১.৬ বিলিয়ন মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে বনের উপর নির্ভর করে। সুতরাং বন সংরক্ষণের গুরুত্ব অপরিসীম। এ ব্যাপারে আমাদের জনগণের মধ্যে সচেতনতা আনতে হবে। বর্তমান সরকার এ ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন। সবার মধ্যে সচেতনতা আসলে আমরা আশাকরি আমাদের দেশ বন সংরক্ষণে এগিয়ে যাবে।
বক্তারা আরো বলেন, আমাদের মত জনবহুল দেশে বন সংরক্ষণ একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ। বন রক্ষার জন্য স্থানীয় জনগণের সহায়তার সাথে রাজনৈতিক কমিটমেন্টরও প্রয়োজন আছে। সবার যদি সদিচ্ছা থাকে তাহলে বন সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মো. ওয়াসিউল ইসলাম। আরও বক্তব্য রাখেন ডিসিপ্লিনের শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. নাজমুস সাদাত ও সহযোগী অধ্যাপক ড. অরুণ কান্তি বোস।
অনুষ্ঠানে কুইজ প্রতিযোগিতা ও থ্রি মিনিটস টক কম্পিটিশনের গ্র্যান্ড ফিনালের বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধান অতিথি। টক কম্পিটিশনে চ্যাম্পিয়ন, রানার্সআপ ও পিপলস চয়েজ হিসেবে মোট তিনজনকে পুরস্কারস্বরূপ ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও প্রাইজমানি প্রদান করা হয়। এছাড়া বাকি অংশগ্রহণকারীদের সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
খুবি প্রতিনিধি:
Source: দৈনিক ভোরের বার্তা